Latest Update
ইছাপুরা সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্ত
প্রমত্তা-পদ্মাবিধৌত উর্বর পাললিক বিক্রমপুর পরগণা; অসংখ্য মনীষীর জন্ম দিয়েছে। তাঁদের শিক্ষা-দীক্ষা ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের সুখ্যাতি সারাবিশ্বে। এই পাললিক পরগনার কেন্দ্রবিন্দুতেই অবস্থিত স্বমহিমায় উজ্জ¦ল বাতিঘর ইছাপুরা সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়।
বিক্রমপুরের কাউলিপাড়ার বিশিষ্ট জমিদার বাড়ৈজ্যা চৌধুরী ও তার পরিবার জনকল্যাণে সর্বপ্রথম এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। খড়ৎফ গধপধঁষধু ১৮৩৫ সালে সর্বস্তরে ইংরেজি ভাষা ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে উড়হিধিৎফ ঋরষঃৎধঃরড়হ ঞযবড়ৎু নিয়ে যখন ভারতবর্ষে আসলে তখন প্রত্যেক পরগণার কেন্দ্রে কিছু ইংরেজি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ধারাবাহিকতায় আনুমানিক ১৮৬২ সালে বাবু ব্রজকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় চৌধুরী স্থানীয় শিক্ষানুরাগীদের নিয়ে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। যার প্রথম প্রধান শিক্ষক ছিলেন তদীয় দৌহিত্র খ্যাতিমান বাবুনলিনীকান্ত বন্দোপাধ্যায় চৌধুরী।
কাউলীপাড়ার ইংরেজি উচ্চ বিদ্যালয়টি পদ্মায় বিলীন হলে সেখানকার জমিদারগণ স্থানান্তরিত হয়ে এই এলাকায় বসতি স্থাপন করলে বিদ্যালয়টিও চম্পকদীর বকুলতলায় স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে চন্দনধূল নিবাসী বাবু শ্যামাকান্ত বন্দোপাধ্যায় চৌধুরী এককালীন বহু অর্থ ব্যয় করে বিদ্যালয়টির গতি ত্বরান্বিত করেন এবং বাবু হরিমোহন গাঙ্গুলীকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করেন। তখন বিদ্যালয়ের নাম ছিল চন্দনবাগ হাইস্কুল।
কাউলীপাড়া থেকে আগত বাবু সুরেশকান্ত বন্দোপাধ্যায় ১৯ বিঘা জমি কিনে ১৮৯২ সালে চম্পকদীর চন্দনবাগ হাইস্কুলটি ইছাপুরায় স্থানান্তর করলে কালক্রমে এর নাম হয় ইছাপুরা ইংরেজি হাইস্কুল। ইছাপুরায় হাইস্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠিা লাভের পর এর প্রথম প্রধান শিক্ষক হন বাবু দীনবন্ধু রায়। ১৯৩২ সালে বাবু দীনবন্ধু রায় অবসর গ্রহণ করলে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন বাবু ক্ষিরোদ গাঙ্গুলী, এ ধারাবাহিকতায় পর্যায়ক্রমে বাবু সুরেন্দ্র লাল সেন, বাবু কালীপদ মুখার্জী, বাবু নলিনীকান্ত ব্যানার্জী চৌধুরী প্রমুখ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর জনাব আব্দুর রহমান কাল (প্রথম মুসলিম প্রধান শিক্ষক), জনাব হারুন-অর-রশিদ, জনাব মোঃ শাহজাহান, জনাব মোঃ আলাউদ্দিন, জনাব জাহাঙ্গীর মিয়া, জনাব শফিকুল ইসলাম (২০১০ সালে মডেল প্রকল্পে অর্ন্তভূক্ত হয়), ২০১৮ সালের ১৫ই নভেম্বর জাতীয়করণের পর জনাব মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন এবং বর্তমান চলতি দায়িত্ব পালন করছেন জনাব মোঃ জামাল হোসেন মিঞা (ভারপ্রাপ্ত)।
সময়ের বিবর্তনে, যুগের চাহিদা মেটাতে উক্ত বিদ্যালয়ের নামের সাথে সংযুক্ত হয়েছে কখনো ইছাপুরা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, কখনো আবার সংযুক্ত হয়েছে ইছাপুরা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টির ঈর্ষণীয় ফলাফল ও সহপাঠক্রমিক কর্মকান্ডের ফলে ২০০৮ সালে সরকারের মডেল প্রকল্প ভূক্ত হয়ে উপজেলার মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে পরিণত হয়।
সর্বশেষ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন হিতাকাক্সক্ষীদের প্রচেষ্টায় বিশেষত বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র মেজর জেনারেল (অবঃ) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সার্বিক প্রচেষ্টায় ২০১৮ সালে ১৫ই নভেম্বর জাতীয়করণ করা হয়।